একবিংশ শতাব্দীতে অর্থাৎ ২০০১ থেকে ২১০০ সাল পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে পৃথিবী প্রায় ২২৪টি সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হবে। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৭টি সূর্যগ্রহণ হবে ‘হাইব্রিড সূর্যগ্রহণ’ বা ‘রিং অফ ফায়ার’। চলমান শতাব্দীতে বিরল প্রজাতির এই ‘হাইব্রিড সূর্যগ্রহণ’ চলছে বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে। জ্যোতিষ ক্যালেন্ডার অনুসারে, বৃহস্পতিবার সূর্যগ্রহণ শুরু হয়েছে সকাল সাতটা ৩৪ মিনিট। শেষ হবে বেলা ১২ টা ৫৯ মিনিট।
মূলত এ সময়টাতে চাঁদ সূর্যের কেন্দ্র বরাবর অবস্থান করে ও সূর্যকে ঢেকে রাখে। ঢেকে রাখা অংশের বাইরের প্রান্তজুড়ে চাঁদের চারপাশে আগুনের বলয় দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। চাঁদের কক্ষপথ সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর কক্ষপথের তুলনায় প্রায় পাঁচ ডিগ্রি ঝুঁকে থাকে।
সূর্যের চেয়ে চাঁদ প্রায় ৪০০ গুণ ছোট। কিন্তু সূর্যের তুলনায় পৃথিবীর ৪০০ গুণ কাছাকাছি চাঁদের অবস্থান। যার ফলে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে চাঁদ-সূর্যের আকার প্রায় একই দেখায়। পূর্ণগ্রহণের সময় সূর্যকে সম্পূর্ণরূপে ঢেকে দেয় চাঁদ আর চারপাশে জ্বলন্ত সূর্যের আলো কয়েক সেকেন্ডের জন্য একটি ‘রিং’ আকৃতি ধারণ করে।
বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ বাংলাদেশ থেকে দেখা যাবে না। বিশেষ এই সূর্যগ্রহণটি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর অতিক্রম করে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্ব তিমুর, অস্ট্রেলিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার অঞ্চলগুলো অতিক্রম করবে। এই অঞ্চলের দেশগুলোতে ‘রিং অফ ফায়ার’ দেখা যাবে। মাদাগাস্কারের দক্ষিণে প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে এবং ইন্দোনেশিয়া ও হাওয়াইয়ের সমদূরত্বে উত্তর-পূর্বেও সূর্যগ্রহণটি দেখা যাবে।
সর্বশেষ হাইব্রিড সূর্যগ্রহণ হয়েছিল ২০১৩ সালে এবং পরবর্তীতে ঘটবে ২০৩১ সালে। স্পেস ডটকম বলছে, পরবর্তী শতাব্দীতে ২১৬৪ সালের ২৩ মার্চ হাইব্রিড সূর্যগ্রহণ দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন মহাকাশ পর্যবেক্ষকরা।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, চোখে উপযুক্ত সুরক্ষা ছাড়া সূর্যগ্রহণ দেখলে চোখের বড়সড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। যে ক্ষতি চিরস্থায়ী । তাই, সূর্যগ্রহণ দেখার জন্য উপযুক্ত ফিল্টার যেমন কালো পলিমার, অ্যালুমিনাইজড মাইলার বা ১৪ নং শেডের ওয়েল্ডিং চশমা ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও, টেলিস্কোপের মাধ্যমে হোয়াইটবোর্ডে সূর্যের ছবির প্রতিফলন পেলে সহজেই সূর্যগ্রহণ দেখা সম্ভব।
Post a Comment